ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর নির্বাচন:: জেলা বিএনপির সাংবাদিক সম্মেলন

0 3

DSC_0008ডেস্ক ২৪::  আসন্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি কে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। পৌর মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান মোল্লা (কচি)’র মৌড়াইলস্থ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেয়র প্রার্থী লিখিত বক্তব্য শেষে জেলা নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
লিখিত বক্তব্য এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ নির্বাচনের পূর্বে গণ গ্রেফতার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর আচরণ বিধি লঙ্ঘন, প্রশাসনের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তৃতার অংশ ::

সম্মানিত সাংবাদিক বৃন্দ,
আস্সালামু আলাইকুম।

দেশ ও জাতীর ক্রান্তি কালে এক কঠিন সময়ে আমরা আপনাদের সামনে আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু তথ্য উপস্থাপন করার জন্যই আজকের এই আয়োজন। যা সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সব দলের মিলিত ইচ্ছায় যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা বর্তমান সংবিধান থেকে বাদ দিয়েছে বিনা ভোটের এই সরকার। দেশে আজ গণতন্ত্রের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব নেই। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। ফ্যাসিবাদী এই সরকার সব তছনছ করে দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্র আজ ফ্যাসিবাদী একদলীয় বাকশালী সরকারের হাতে ছিন্ন ভিন্ন।

সম্মানিত সাংবাদিক ভাইয়েরা,
আগামী ২০শে মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বে এবং দাখিলের দিনও কি অন্যায় আচরন এর সম্মূখীন হতে হয়েছ আমাদের তা আপনাদের সকলেরই জানা। সরকার দলীয় প্রার্থী কোনরূপ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যাপক শোডাউন করে মনোনয়ন দাখিল করেন। কোথাও প্রশাসন টু শব্দটিও করল না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ আইন মেনে ডি.সি অফিসে প্রবেশের পথে তল্পিবাহক পক্ষপাতদুষ্ট পুলিশ সদস্যদের আচরন সাংবাদিক ভাইয়েরা দেখেছেন। ঐ স্থানেই তার উচ্চস্বরে আস্ফালন ও হুমকি প্রদান। ঐদিন রাত থেকেই আবার শুরু হলো পুলিশের নতুন করে অত্যাচার নিপীড়ন হয়রানি। শাসকদলের ইশারায় এসব অত্যাচারের মাত্রা দিনে দিনে বাড়ছে যা অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে জেতাতেই প্রশাসনের এই মহাপরিকল্পনার এজেন্ডা হিসেবে গত কয়দিনে জেলা বিএনপির নেতা মো: মাহিন, পৌর বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম খোকন, ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান রতন, সাধারণ সম্পাদক মো: ফেরদৌস, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, যুবদলনেতা মো: ইকবাল, জুয়েল, শাহেদ, জাহেদ, শাহনূর, রুকেল, শানু, শ্রমিকদল নেতা আজিজ, ছাত্রদলনেতা রাশেদ, রাসেল, রাজীব, সোহেল সহ যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের গত ১১ ও ১২ই জানুয়ারী ইং তারিখে ছাত্রলীগ, মাদ্রাসা ছাত্র ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের মামলা আসামী দেখানো হয়েছে। আপনারা সকলেই অবগত আছেন গত ১১ ও ১২ জানুয়ারী মাদ্রাসা ছাত্র, পুলিশ ও সরকারি দলের সংঘটিত ঘটনায় বিএনপি তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেউই জড়িত ছিল না। ১১ ও ১২ জানুয়ারী ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। ফলাও করে এসব ঘটনা ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় দেখানো ও প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে কোন বিএনপি নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতার কোন তথ্য প্রমান নেই। বিজ্ঞ সাংবাদিক ভাইদের কাছেও আপনাদের প্রচারিত ও প্রকাশিত তথ্য প্রমান স্টীল ছবি ও ভিডিও ফুটেজ আছে। সেদিন চট্টগ্রাম রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি মাহবুবুর রহমানের মধ্যস্থতায় শর্ত স্বাপেক্ষে হরতাল প্রত্যাহার ও মাদ্রাসা ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হবে না বলে মধ্যস্থতা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য শুধুমাত্র বিএনপি করার কারণেই প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে শুধুমাত্র পৌর নির্বাচনে শাসকদলের প্রার্থীকে প্রশাসন দিয়ে একতরফা বিজয়ী ঘোষনা করার হীন উদ্দেশ্যেই এসব অন্যায় ধরপাকর, পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
ইতিমধ্যে যেভাবে ১ম দফায় অনুষ্ঠিত ২৩৪টি পৌরসভা নির্বাচনে একতরফা ও সাজানো নির্বাচন করে তথাকথিত বিজয়ের নাটক আওয়ামীলীগ মঞ্চস্থ করেছে। একই কায়দায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনেও অনুরূপ একটি ভূমিকায় ও একদলীয় নির্বাচন করার জন্য বর্তমান শাসকদল সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিএনপির সাহসী ও দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার করে জনমনে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে একতরফা সুযোগ সৃষ্টির জন্যই এহেন নির্লজ্জ্ব অপকর্ম করে যাচ্ছে।

প্রিয়া সাংবাদিক ভাইয়েরা,
পৃথিবীর কোন দেশে কোন সরকারই শেষ সরকার নয়। প্রতিহিংসার এ খেলা বন্ধ করে সুষ্ঠু স্বাভাবিক লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরির মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ, সম অধিকার সুনিশ্চিত করা হোক। আইনে শাষন সুপ্রতিষ্ঠিত করা হোক। আমরা ভিন্ন ভিন্ন দলের হলেও এদেশ আমাদের সকলের। বিরোধীদল দমনের নামে নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা দান ও হয়ারানিতে প্রশাসন সরকার দলের অঙ্গ সংগঠনের ভূমিকা পালন করছে।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
আপনাদের মাধ্যমে আমরা জানাতে চাই সরকার দলীয় প্রার্থী নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। যার তথ্য প্রমাও আছে। তিনি জনসভা আকারে সভা এমনকি নৌকা প্রতীকের ব্যানার নিয়ে রাজপথে মিছিল করছেন। গ্যাস ফিল্ডের মত রাষ্ট্রীয় স্পর্ষকাতর প্রতিষ্ঠানে বিদেশী কর্মরত লোকজনের উপরও সন্ত্রাসী কায়দায় ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতার নেতৃত্বে হামলায় অংশ গ্রহণকারীরা প্রায়ই সন্ত্রাসী কায়দায় হোন্ডা মিছিল করছে কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। আমরা শাসকদলের সকল অন্যায় ও অনৈতিক কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সকল প্রকার পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও আটককৃত সকল নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করছি।

সবশেষে বলতে চাই, স্থানীয় শাসকদলের নেতৃত্ব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিগত দিনের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, পারস্পরিক সহমর্মিতা ও শ্রদ্ধাবোধের বন্ধনকে চিরতরে ধ্বংস করে দিয়েছে। যা অতিতের বিএনপি ও আওয়ামীলীগ শাসনামলে কখনো হয়নি।

এতক্ষন ধৈর্য ধরে আপনারা আমাদের বক্তব্য শুনেছেন এজন্য আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা আশা করি সত্য ন্যায় ও গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। আমাদের বক্তব্যগুলো ভালভাবে জেলা তথা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবেন। কারণ সংবাদপত্র সমাজের দর্পন আর আপনারা হলেন সেই দর্পনের রূপকার। সবাই ভাল ও সুস্থ থাকবেন। খোদা হাফেজ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।

আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

Shares